ধর্ষণ ও আমরা
সেদিন খবরে দেখছিলাম, মহারাষ্ট্রের একজন সরকারি কর্মচারী এক স্কুল পড়ুয়া নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছে। পকসো আইনে সে নিয়ে মামলা চলছে। সুপ্রিম কোর্ট অভিযুক্তকে অফার দিচ্ছে, অভিযুক্ত যদি ধর্ষিতা মেয়েটিকে যদি বিয়ে করে তাহলে তার চাকরিও যাবে না এবং শাস্তিও হবে না। নানা কোনো সিনেমার গল্প নয়, একেবারে বাস্তব ঘটনা! বিশ্বাস নাহলে আনন্দবাজারের খবরটি পড়ে নিতে পারেন [খবর] । সত্যি এক উদ্ভট ঘটনা, ধর্ষণ করে বিয়ে করে নিলেই কি সব দোষ মাফ?
আবার এমনও হতে পারে, যদি কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে (কিম্বা তদ্বিপরীত হয় ), তাহলে কি তাদের আরেকবার বিয়ে দিয়ে দেবে মহামান্য আদালত!? অনেকে ভাবতে পারেন বিবাহিত স্বামী স্ত্রীর মধ্যেও কি আবার ধর্ষণ হতে পারে, আমি বলব কেন হতে পারে না! প্রতিটি সম্মতিহীন জোরপুর্বক হওয়া যৌন মিলনই ধর্ষণ; তা সে নারী, পুরুষ বা অন্য যেকোনো লিঙ্গের উপরেই হোক না কেন। যৌনতা যেহেতু সার্বজনীন সেহেতু ধর্ষণও সার্বজনীন অর্থাৎ ধর্ষণ যার কারো সাথেই ঘটতে পারে, লিঙ্গের সাথে ধর্ষণের কোনো সম্পর্ক নেই। অনেকের মনে এক ভ্রান্ত ধারনা বর্তমান থাকে যে ধর্ষণ শুধু নারীদের উপরেই হতে পারে, কিন্তু ধর্ষণ পুরুষ সহ্ অন্যান্য যেকোনো লিঙ্গের মানুষের উপরেই হতে পারে। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের প্রায় ১৮% পুরুষ ধর্ষিত হয়। আমরা খবরের দিকে চোখ ফেরালে এমন অনেক উদাহরণ পাবো যেখানে পুরুষ বা অন্যান্য লিঙ্গের মানুষও ধর্ষিত হয়েছে।
সে যার সাথেই হোক না কেন, ধর্ষণ কখনো কাম্য নয়, এবং ধর্ষণকারীর শাস্তি হওয়া দরকার তবে সেটা হওয়া দরকার দ্রুত কিন্তু সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া মেনে। কারণ আজকাল অনেক এমন উদাহরণ আমাদের চোখে পড়ছে যেখানে কিছু নারী তাদের সুরক্ষার জন্য তৈরি আইনের অপপ্রয়োগ করে কিছু নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে তাদের জীবন নষ্ট করে দেয়। আমাদের মনে রাখা দরকার বর্তমানের ইন্টারনেটের যুগে যে মানুষের গায়ে একবার ধর্ষকের তকমা লেগে যায়, আদালত তাকে বেকসুর খালাস করে দিলেও সে আর সমাজের স্বাভাবিক স্রোতে ফিরতে পারে না। তাই এইসব বিকৃত মস্তিস্কযুক্ত নারীদেরও শাস্তি প্রয়োজন। ভারতে বর্তমানে নারীদের সুরক্ষার জন্য ৪০টিরও বেশি আইন আছে কিন্তু পুরুষদের জন্যেই তো একটিও নেই। আমার মতে ধর্ষণের আইনগুলি লিঙ্গনিরপেক্ষ করা উচিত।
এ নিয়ে একটি বেশ ভালো নিবন্ধ আছে [এখানে]।
[প্রথম
ছবি Freepik থেকে]
ধর্ষণ সমাজের কলঙ্ক/ তার ‘মুল’ কারণ খুঁজে / প্রতিরোধ করা দরকার।
~ পলাশ বাউরি