মনের রোগে আক্রান্ত সমাজ
সমাজ এখন এক বিপদসঙ্কুল সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে কারণটা করোনা ভাইরাস নয়, বরং মানুষের অজ্ঞতা ও মুর্খামি! করোনা ভাইরাসের প্রকোপ একটু কমতে না কমতেই মানুষজন প্রায় সব স্বাস্থ্যবিধি শিকেই তুলে সর্বত্র ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, পাঁচটি রাজ্যে আরও খারাপ অবস্থা, সেখানে লকডাউনও শুরু হয়েছে।
প্রায় একবছর ধরে ঘরবন্দি থেকে মানুষের অবস্থা হয়েছিল খাঁচাবন্দী পাখির মতো। সাথে সাথে প্রকট হয় মানুষিক নানা ব্যধি। আসলে আমাদের সমাজে শারীরিক ব্যধিকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, মানুষিক ব্যধিকে তার সিকিভাগও গুরুত্ব দেওয়া হয়না। মানুষের সংস্পর্শহীন বহুদিন থাকার ফলে, মানুষের মনে নেমে আসে অবসাদ, উদ্বেগ বা একাকীত্বের কালো মেঘ।
এমনকি শুনলে অবাক হবে, এই লকডাউন কালে বিবাহ বিচ্ছেদের হার অনেক পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল , এর কারণ আমার মনে হয়, যখন কর্মক্ষেত্রগুলি খোলা ছিল তখন, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই সকালে বেরিয়ে যেত, এবং রাত্রে ঘর ফিরত। সারাদিন তেমন কথাবার্তাও হতো না, ফলে তাদের মধ্যে অজান্তেই একটা মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়। তারপর যখন, লকডাউনে সারাদিন তাদের একসঙ্গে কাটাতে হত, ফলে স্বাভাবিকভাবেই মনমালিন্য প্রকাশ পায়। শেষমেশ, বিবাহ বিচ্ছেদ!
অনেক মানুষ মূলত যুবসমাজের মনে অনেকক্ষেত্রে ছোটখাটো ডিপ্রেশনের বা অ্যানক্সাইটির কালো মেঘ বর্তমান থাকতেই পারে, সেগুলিকে বড়রূপ ধারণ করতে সাহায্য করেছিল এই লকডাউন। বেশিরভাগ মানুষই এগুলিকে অনুধাবন করতে পারেনা এবং শেষেএকটা অঘটন ঘটেই যেতে পারে। আমার নিজের দেখাতে এমন ঘটনা ঘটতে দেখেছি।
সাধারণ মানুষের কাছে এইসব মানুষিক রোগগুলি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা না থাকার ফলেই এইসব রোগের এত প্রকোপ বৃদ্ধি ঘটেছে। এখনও অনেক মানুষ মনে করে মানুষিক রোগ মানেই পাগল!
শিক্ষার্থীদের কমবয়েস থেকেই এইসব রোগ নিয়ে স্কুলে সচেতন করা প্রয়োজন নাহলে ভবিষ্যতে অবস্থা আরও বেগতিক হতে পারে। তাছাড়া বর্তমানের সোশ্যাল মিডিয়ারও এইসব রোগ বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আজকালের ছেলে মেয়ের নিজের মুঠোফোনেই সারাদিন মাথাগুঁজে থাকে, ফলে চোখের সমস্যার পাশাপাশি অজান্তেই তাদের মনে বাসা বাঁধে নানান মানুষিক রোগ।
বেশ কিছুদিন লেখা হয়নি, পড়ায় ব্যস্ত ছিলাম!
[প্রথম
ছবিটি Freepik থেকে]
হাজার লাইকের হাতছানি / ফাঁকা মাঠে ঘুরে বেড়ানো কালো মেঘ / মনের রোগে আক্রান্ত আজ সমাজ
~ পলাশ বাউরি