চাপ
৫ জানুয়ারি , ২০২১
মানুষ হল সামাজিক জীব , মানুষ একা একা সমাজহীন ভাবে জীবনধারণ করতে পারে না। বর্তমান ও ভবিষ্যতের অনেক সমস্যারই সমাধান হতে পারত যৌথ পরিবারের মাধ্যমে। কিন্তু বর্তমানের অধিকাংশ পরিবারই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণিকা পরিবার। অর্থাৎ নবজাতক তার শিশুকাল থেকেই বেশি বেশি মানুষের সমাগম পাচ্ছে না, তার থাকে শুধু মা-টি ও বাবা-টি এবং খুব বেশি হলে একজন দাদা-টি বা দিদি-টি ফলে তারা ছোট বয়স থেকেই বড় হচ্ছে এক এক অদৃশ্য একাকীত্বের মধ্যে।
পরবর্তীকালে এইসব ছেলে-মেয়েরা সাধারণভাবে মানুষজনের সাথে সহজে সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয় ফলে তাদের জীবনে নেমে আসতে পারে ডিপ্রেশনের কালো ছায়া। কিন্তু সেই বাচ্চাটিকে কমবয়স থেকেই যদি অনেক মানুষজনের মাঝে লালনপালন করা হত তাহলে চিত্রটা অন্য হতে পারত।
আবার অনেক মানুষের সানিধ্যে থাকলে মানুষের মধ্যে তুলনামূলক অধিক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের সঞ্চার হয়। সেটিও এই একক পরিবারে লালিত হওয়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। বিপরীতে তাদের মনে উদারতার সৃষ্টি না হয়ে , সৃষ্টি হয় সঙ্কীর্ণদৃষ্টিভঙ্গির। দৃষ্টিভঙ্গি কতটা প্রয়োজনীয় সেটা আগেই একদিন আলোচনা করেছি। এই দৃষ্টিভঙ্গি সঙ্কীর্ণ হওয়ার ফলে তাদের কাজের পরিধিও কমে যায় ফলে তারা জীবনে বড় মাপের কাজ থেকে বিরতই থেকে যায়। আবার এইসব থেকেই সৃষ্টি হয় আমিত্ব ভাবের যা আরও ভয়ানক।
তাছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা বর্তমান যুগের মা বাবারা নিজের ইচ্ছে পূরণের বোঝা চাপিয়ে দেন নিজের সন্তানের উপর , ফলে তাদের দুর্বল কাঁধের ওপর পড়তে থাকে অসহনীয় চাপ। তাছাড়া “এক্সট্রা স্কিল” যেমন আঁকা , নাচ , গানের চাপ তো আছে , আমার তো মনে হয় না , কোনো ৩ বছরের বাচ্চা তার মা-বাবাকে বলে যে তার গান শেখার ইচ্ছে হয়েছে কিংবা নাচ শেখার ইচ্ছা হয়েছে। এগুলো সব আসলে তাদের মা বাবাদের সখ।
ফলাফলস্বরূপ , নবজাতক শিশুর ওপর পড়তে থাকে , কুইন্টাল কুইন্টাল চাপ। শেষমেস যার প্রভাব পড়ে বড় হয়ে ওঠার পর , যুব বা পৌঢ় জীবনে।
একা একা বাস করে বিশ্ব / আজ জগৎ ভোগে আমিত্বে
~ পলাশ বাউরি